শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১২

জিমেইলে টিপস


জিমেইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
অনেক সময় অসতর্কতার কারণে ই-মেইলের পাসওয়ার্ড চুরি (হ্যাকিং) হয়ে যায়জিমেইল ব্যবহারকারীরা মোবাইল ভেরিফিকেশন চালু ইচ্ছে করে ই-মেইলের নিরাপত্তাব্যবস্থা মজবুত করতে পারেনএটি চালু করলে প্রতিবার আপনার ই-মেইল লগ-ইন করার সময় আপনার মোবাইলে একটি সংকেত বা কোড পাঠানো হবেওই কোড ছাড়া ই-মেইল চালু করা যাবে না, যার ফলে হ্যাকারদের পক্ষে আপনার ই-মেইল আয়ত্তে নেওয়া সম্ভব হবে নামোবাইল ভেরিফিকেশন চালু করার জন্য প্রথমে আপনার জিমেইল আইডি লগইন করুনএরপর সবার ওপরে ডানে settings অপশনে যান, সেখান থেকে account ট্যাবের অন্তর্গত google account settings অপশনে ক্লিক করুনএখন security ট্যাব থেকে using 2-step verification অপশনে ক্লিক করুনএর পরের পেজে start setup বাটনে ক্লিক করুনএখন আপনার মোবাইল নম্বর ভেরিফাই করার জন্য একটি পেজ আসবে, ওই পেজের ড্রপ ডাউন মেন্যু থেকে Text message (sms) or voice call নির্বাচন করুনএরপর Add a mobile or landphone number where google can send code ড্রপ ডাউন মেন্যুতে Bangladesh নির্বাচিত করুন এবং ডান পাশের খালি বক্সে আপনার মোবাইল নম্বর লিখুনএখন send code বাটনে ক্লিক করুনএরপর জিমেইল থেকে আপনার মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে একটি কোড আসবেওই কোডটি code লেখা বক্সে লিখে verify বাটনে ক্লিক করুন এবং next চাপুন পরবর্তী পেজেও next চাপুনএরপর Add a backup পেজ আসবে, এই পেজে আপনাকে ১০টি ব্যাকআপ কোড দেওয়া হবেযদি কোনো কারণে আপনার মোবাইল হারিয়ে যায় বা মোবাইলে মেসেজ না আসে, তাহলে ব্যাকআপ কোড দিয়ে ই-মেইল লগইন করতে পারবেন ব্যাকআপ কোড সংরক্ষণের পর Yes, I have a copy of my backup verification codes অপশনে টিক চিহ্ন দিয়ে next দিনএর পরের পেজে আপনার আরেকটি বিকল্প মোবাইল নম্বর দিয়ে next চাপুনতারপর Turn on 2-step verification অপশনে ক্লিক করলেই মোবাইল ভেরিফিকেশন চালু হয়ে যাবেএখন থেকে প্রতিবার জিমেইল লগ-ইন করার সময় মোবাইলে একটি কোড আসবে, আর ওটা ব্যবহার করেই জিমেইল লগ-ইন করা যাবে

সূত্র: দৈনিক প্রথম-আলো

কম্পিউটারের গতি বাড়াতে...


কম্পিউটারের গতি বাড়ানো যায় কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখলেতেমন কিছু বিষয় নিচে দেওয়া হলো
১. কম্পিউটারে কখনো Theme ইনস্টল করা উচিত নয়থিম কম্পিউটারকে অনেক ধীর করে দেয়
২. কম্পিউটারে অ্যানিমেটেড ওয়ালপেপার, কথা বলা ঘড়ি (ভয়েস ঘড়ি) ইত্যাদি ইনস্টল করবেন নাএগুলো কম্পিউটারকে ধীর করে দেয়
৩. Recycle bin সব সময় ফাঁকা রাখুনRecycle bin-এ কোনো ফাইল রাখবেন নাRecycle bin-এ ফাইল রাখলে কম্পিউটারের গতি কমে যায়
৪. Start থেকে Run-এ ক্লিক করে এক এক করে Prefetch, temp, %temp%, cookies, recent লিখে ok করুনফোল্ডারগুলো খুললে সবগুলো ফাইল মুছে ফেলুন (ডিলিট) কোনো ফাইল না মুছলে সেটি বাদ দিয়ে বাকিগুলো মুছে ফেলুন
৫. কিছু সময় পরপর Start থেকে Run-এ ক্লিক করে tree লিখে ok করুনএতে র‌্যামের কার্যক্ষমতা বাড়বে
৬. ডেস্কটপে মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Properties-এ যানএখন ডান পাশ থেকে Settings-এ ক্লিক করে ১৬ বিট নির্বাচন করে ok করুন
৭. আবার Start থেকে Run-এ ক্লিক করে msconfig লিখে ok করুনএখন ডান পাশের Services-এ ক্লিক করুনযে প্রোগ্রামগুলো সব সময় কাজে লাগে না, সেগুলোর বাঁ পাশ থেকে টিক চিহ্ন তুলে দিনএখন Startup-এ ক্লিক করে বাঁ পাশের সবগুলো টিক চিহ্ন তুলে দিয়ে ok করুনRestart দিতে বললে Restart দিন
৮. এখন My Computer খুলে সি ড্রাইভের ওপর মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Properties-এ যানতারপর Disk Cleanup-এ ক্লিক করে কিছু সময় অপেক্ষা করুন নতুন উইন্ডো এলে বাঁ পাশের সবগুলো বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে ok করুনএভাবে প্রত্যেকটি ড্রাইভ ক্লিন করতে পারেন
৯. Start থেকে Control Panel- যানAutomatic Updates-এ ডবল ক্লিক করুনTurn off Automatic Updates নির্বাচন করে ok তে ক্লিক করুনযাঁরা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, এটা তাঁদের জন্য প্রযোজ্য
১০. My Computer-এর ওপর মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Properties-এ যানএখন Advanced Settings সিলেক্ট করে Performance-এর নিচে Settings-এ ক্লিক করুনএখন Customs সিলেক্ট করে সবার নিচের বক্সের ঠিক চিহ্নটি রেখে বাকি সবগুলো তুলে দিয়ে ok করুন
১১. আবার My Computer-এর ওপর মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Properties-এ যানএখন Advanced সিলেক্ট করে নৃিচে ডান পাশে Error Reporting-এ ক্লিক করুন Disable সিলেক্ট করে ok করুন
(
আগামীকাল সমাপ্য) মো. আমিনুর রহমান

১২. My computer-এ মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে Properties-এ যানএখন System Restore-এ ক্লিক করে Turn off System Restore on all drives-এ ঠিক চিহ্ন দিয়ে ok তে ক্লিক করুননতুন একটি উইন্ডো এলে সেটির yes-এ ক্লিক করুন
ডেস্কটপে যত কম আইকন রাখা যায় ততই ভালো
১৩. Ctrl + Alt + Delete চেপে বা Task bar-এ রাইট ক্লিক করে Task Manager ওপেন করুনতারপর Processes-এ ক্লিক করুনঅনেকগুলো প্রোগ্রামের তালিকা দেখতে পাবেনএর মধ্যে বর্তমানে যে প্রোগ্রামগুলো কাজে লাগছে না, সেগুলো সিলেক্ট করে End Process-এ ক্লিক করে বন্ধ করে দেনএই প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে কিন্তু অপারেটিং সিস্টেমের প্রোগ্রামও আছেযদি ভুল করে কোনো প্রোগ্রাম বন্ধ করে দেন এবং এতে যদি অপারেটিং সিস্টেমের কোনো সমস্যা হয়, তাহলে কম্পিউটার Restart দিনঠিক হয়ে যাবে
১৪. কম্পিউটারের র‌্যাম কম থাকলে কম্পিউটার ধীরগতির হয়ে যায়ভার্চুয়াল মেমোরি বাড়িয়ে কম্পিউটার কিছুটা ফাস্ট করা যায় ভার্চুয়াল মেমোরি বাড়ানোর জন্য প্রথমে My computer-এ মাউস রেখে ডান বাটনে ক্লিক করে properties-এ যানএখন Advance-এ ক্লিক করে performance-এর settings-এ ক্লিক করুনআবার Advance-এ ক্লিক করুনএখন change-এ ক্লিক করে নতুন উইন্ডো এলে সেটির Initial size Maximum size-এ আপনার ইচ্ছামতো size লিখে set-এ ক্লিক করে ok দিয়ে বেরিয়ে আসুনতবে Initial size-এ আপনার কম্পিউটারের র‌্যামের size-এর দ্বিগুণ এবং Maximum size-এ র‌্যামের size-এর চারগুণ দিলে ভালো হয়
১৫. প্রথমে Control panel-এ যানControl panel থেকে Add or Remove-এ ডবল ক্লিক করুনএখন বাঁ পাশ থেকে Add/Remove windows components-এ ক্লিক করুননতুন যে উইন্ডো আসবে সেটির বাঁ পাশ থেকে যে প্রোগ্রামগুলো আপনার কাজে লাগে না, সেগুলোর পাশের টিক চিহ্ন তুলে দিন, তারপর Accessories and Utilities নির্বাচন করে Details-এ ক্লিক করুননতুন যে উইন্ডো আসবে সেটি থেকে একই পদ্ধতিতে যে প্রোগ্রামগুলো আপনার কাজে লাগে না সেগুলোর পাশের টিক চিহ্ন তুলে দিয়ে ok করুনএখন next-এ ক্লিক করুন Successful meassage এলে Finish-এ ক্লিক করুনRestart করতে বললে Restart করুন
১৬. শুধু আপনার প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলো ইনস্টল করুনযে সফটওয়্যারগুলো সব সময় কাজে লাগে না, সেগুলো কাজ শেষ করে আবার আন-ইনস্টল করে দিন
১৭. হার্ডডিস্কের ১৫ শতাংশ জায়গা ফাঁকা রাখলে এবং নিয়মিত ডিফ্রাগমেন্ট করলে কম্পিউটার অনেক ফাস্ট থাকে
হার্ডডিস্কের ফাঁকা স্থানের পরিমাণ যত বেশি থাকে ততই ভালো
১৮. সফটওয়্যার ইনস্টল করে ব্যবহার করার চেয়ে পোর্টেবল (বহনযোগ্য) সফটওয়্যার ব্যবহার করলে কম্পিউটার বেশি ফাস্ট থাকে
সূত্র: দৈনিক প্রথম-আলো

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা


অসুখ হলে ওষুধ খেতে হয়_ এ কথা আমরা সবাই জানিকিন্তু সঠিক নিয়মে ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনেকেই অনুভব করি নাওষুধ খেতে আমরা যতটা তৎপর, ওষুধ খাওয়ার নিয়ম মানতে ততটাই উদাসীনআমাদের এই অবহেলা জীবনরক্ষাকারী ওষুধকে করে তুলতে পারে জীবনবিনাশী বিষ

ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা প্রথমেই যে অনিয়মটা করি তা হলো চিকিৎসকের পরামর্শ না নেওয়াআমরা নিজেরাই নিজেদের চিকিৎসা করি, কখনও আত্মীয়, কখনও বন্ধুর পরামর্শ নেই, কখনও ডাক্তারের চেয়ে ওষুধ বিক্রেতার ওপর বেশি নির্ভর করি'অমুক ওষুধে তমুক ভালো হয়েছিল, তাই আমিও ভালো হব'_ এমন চিন্তাই আমাদের মধ্যে কাজ করেঅথচ লক্ষণ এক হলেই অসুখ এক হবে এমন কোনো কথা নেইআবার একই রোগে একই ওষুধের মাত্রা রোগীভেদে ভিন্ন হতে পারেশুধু অসুখে নয়, ওষুধ সহজলভ্য হওয়ায় সুখেও আমরা অন্যের পরামর্শে ওষুধ খাইমোটা হওয়ার জন্য স্টেরয়েড বা শক্তি বাড়ানোর জন্য ভিটামিন খাই ভাতের চেয়ে বেশিএসবের মারাত্মক, কখনও জীবনবিনাশী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আমরা সম্পূর্ণ অজ্ঞ

যদিও বা কখনো (বাধ্য হয়ে) ডাক্তারের পরামর্শ নেই, ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডাক্তারের বেঁধে দেওয়া বিধি-নিষেধ মানি কমসময়মতো ওষুধ খাওয়া, খাওয়ার আগে না পরে তা বুঝে খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা_ এসব আমরা খেয়াল রাখি নাবিশেষ করে এন্টিবায়োটিকের ডোজের ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি উদাসীন থাকিসবচেয়ে ভয়াবহ হলো ওষুধ বন্ধ করে দেওয়া'জ্বর ভালো হয়ে গেছে, এন্টিবায়োটিক আর কি দরকার'_ ভেবে নিজেরাই ওষুধ বন্ধ করে দেইআবার অন্যদিকে কয়েকদিনে জ্বর ভালো না হলে 'ওষুধ ঠিক নেই' ভেবে তা বন্ধ করে দেই এবং অন্য ডাক্তারের কাছে নতুন ওষুধের প্রত্যাশায় যাই যেসব অসুখে দীর্ঘদিন বা আজীবন ওষুধ খেতে হয় সেখানে আমরা অসুখ নিয়ন্ত্রণে আসলেই তা বন্ধ করে দেই, বুঝতে চাই না যে, রোগ ভালো হয়নি, নিয়ন্ত্রণে আছে কেবলএকসময় লোকমুখে 'ক্যান্সারের ওষুধ' শুনে বাতের ওষুধ বন্ধ করার ঘটনা প্রচুর হয়েছেওষুধ শুরুর মতো বন্ধ করার সময়ও আমরা নিয়ম মানি নাযেসব ওষুধ হঠাৎ বন্ধ করা যায় না তা নিজেরাই হঠাৎ বন্ধ করে দেইওষুধ নিয়ে এই অনাচারে কি ক্ষতি হতে পারে? প্রথম কথা যে রোগের জন্য ওষুধ সেবন করা তার উপশম হবে না, বরং খারাপ হতে পারেওষুধ প্রতিরোধী জীবাণুর আবির্ভাব এক্ষেত্রে সবচেয়ে মারাত্মক হুমকিএন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার জীবাণুর বিরুদ্ধে এদের অকার্যকর করে দিচ্ছেসঠিক এন্টিবায়োটিক দিয়ে যে রোগ শুরুতেই ভালো করা যেত, অপব্যবহারের কারণে তা আর সম্ভব হচ্ছে না, নতুন দামী ওষুধ দরকার হচ্ছে, কখনও তাতেও কাজ হচ্ছে নাবিশেষভাবে বলা যায় যক্ষ্মার কথাযেখানে কমপক্ষে ৬ মাস ওষুধ খেতে হয়, অথচ অনেকেই কয়েক মাস খেয়ে 'ভালো হয়ে গেছি' মনে করে তা বন্ধ করে দেয়ফলশ্রুতিতে তা মারাত্মক মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবিতে পরিণত হয় যা নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিনআর্থিক দিকটাও বিবেচনা করা জরুরি যে চিকিৎসা এখন সুলভে হচ্ছে, অবিবেচকের মতো ওষুধ খেলে তা পরবর্তীতে ব্যয়বহুল হয়ে যেতে পারে

শুধু জীবাণু সংক্রমণ নয়, হাই ব্লাডপ্রেসার, ডায়বেটিস ইত্যাদি অসুখেও 'মাঝে মাঝে ওষুধের ব্যবহার' উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি করে

নিয়মিত ওষুধ খেলেও যদি সেবনবিধি না মানা হয় তবে অনেক ওষুধই অকার্যকর হয়ে যায় খালি পেটে খাবার ওষুধ ভরা পেটে খেলে তা না খাবার মতোই হবেএছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই এক ওষুধ অন্য ওষুধের উপস্থিতিতে কাজ করে নাঅজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শে এসব ওষুধ একত্রে খেলে লাভ তো হবেই না, বরং ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে

মনের মতো ওষুধ খাওয়ার আরেক সমস্যা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াএকজন চিকিৎসক ভালো মতোই জানেন কোন ওষুধের কি সমস্যা আর তাই তা কাকে দেয়া যাবে, কাকে যাবে নানিজে থেকে ওষুধ খেলে এসব বিবেচনা সম্ভব নয়, তাই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা বেশিব্যথার ওষুধ খেয়ে পেট ফুটো হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটেমোটা হওয়ার জন্য স্টেরয়েড খেয়ে অনেকেই মারাত্মক কুশিং সিনড্রোমে আক্রান্ত হন, যা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হয়প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া হঠাৎ ওষুধ বন্ধ করেও অনেকে বিপদে পড়েন, বিশেষ করে স্টেরয়েড হঠাৎ বন্ধ করলে এডিসনিয়ান ক্রাইসিস হতে পারে যাতে থেকে রোগী মারাও যেতে পারে

সাধারণ ওষুধ, যার অনেকগুলো প্রেসক্রিপশন ছাড়াই পাওয়া যায়, বিশেষ অবস্থায় তাও হতে পারে ক্ষতিকরআমরা অনেকেই জানি না যে, ভিটামিন এ বা ক্রিমির ওষুধের মতো সাধারণ ওষুধ গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি করেলিভারের রোগীর জন্য প্যারাসিটামলের মতো ওষুধ হতে পারে ক্ষতির কারণ

অবস্থার জন্য দায়ী আমরা সবাইরোগী যেমন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বাহুল্য ভাবছেন, ডাক্তার তেমনি রোগীকে সঠিক পরামর্শ দিচ্ছেন না, আর কর্তৃপক্ষ হয়ে আছেন উদাসীন

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য রোগীদের যা মেনে চলা উচিত তা হলো_

১. শুধু ডাক্তার পরামর্শ দিলেই ওষুধ সেবন করা যাবে২. বিশেষ অবস্থায় (যেমন গর্ভাবস্থা, লিভারের রোগ ইত্যাদি) সাধারণ ওষুধ যা প্রেসক্রিপশন ছাড়া পাওয়া যায়, তাও ডাক্তারের পরামর্শেই ব্যবহার করতে হবে৩. শুধু ফার্মাসিস্টের কাছ থেকে ওষুধ কেনা উচিতকেনার সময় তার মেয়াদকাল দেখে নিতে হবেমনে রাখবেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ আপনার রোগ সারানোর পরিবর্তে ক্ষতি করতে পারে৪. ডাক্তার ওষুধ খাবার যে নিয়ম বলে দেবেন (কতটুকু ওষুধ, কতক্ষণ পরপর, কত দিন, খাবার আগে না পরে ইত্যাদি), সে অনুযায়ী তা সেবন করতে হবেপ্রয়োজনে তা লিখে রাখুন বা মনে রাখতে অন্যের সাহায্য নিননিজে থেকে ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করা যাবে না৫. চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত নিজে ওষুধ কিনে সেবন করবেন না এতে আপনি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেনঅনেকে নিজে নিজেই দুর্বলতার জন্য ভিটামিন জাতীয় ওষুধ খেতে থাকেনএক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, ভিটামিন শরীরের দুর্বলতা দূর করে নাযে কারণে শরীর দুর্বল হয় সে কারণ দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ খেতে হবেঅপ্রয়োজনীয় বা অতিরিক্ত ভিটামিন খেলে তারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে৬. অনেকে একবার চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বার বার সেই ব্যবস্থাপত্র দেখিয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনেনএক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, প্রথম ব্যবস্থাপত্রে যে ওষুধ যতদিন খেতে বলা হয়েছে ততদিনই খাওয়া যাবেপুনরায় একই অসুখ হলেও সেই একই ওষুধ কাজ নাও করতে পারে৭. অনেকে সামান্য কারণেই ব্যথার ওষুধ বা এন্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করেনঅনেকে এমন কি স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও খানডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই এভাবে ওষুধ খেলে উপকার তো হবেই না, বরং স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে৮. নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে নাসুস্থ বোধ করলেও কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে কোনো সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৯. একই সঙ্গে এলোপ্যাথিক ও অন্যান্য পদ্ধতির চিকিৎসা চালালে তা ডাক্তারকে জানানো উচিত১০. ওষুধ সবসময় আলো থেকে দূরে, ঠাণ্ডা, শুষ্ক স্থানে, শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুনকিছু কিছু ওষুধ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হয়নির্ধারিত তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করলে এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়, এ বিষয়ে সতর্ক থাকুন১১. ব্যবহারের সময় ওষুধ ভালো আছে কিনা দেখে নিননাম ও মাত্রাটা আবার খেয়াল করুন১২. অনেক সময় দোকানদারগণ প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধ না দিয়ে শুধু বিক্রি করার জন্য অন্য কোম্পানির অন্য ওষুধ দিয়ে বলে থাকেন_ একই ওষুধএক্ষেত্রে রোগীদের সতর্ক থাকা উচিত এবং চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে উলি্লখিত নামের ওষুধ কেনা উচিত ওষুধ কেনার সময় আবার ভালো করে যাচাই করে নেবেন এবং ওষুধ বিক্রেতা লিখিত ওষুধের পরিবর্তে অন্য ওষুধ দিচ্ছে কিনা দেখে নিন১৩. বাচ্চা ও বয়স্কদের বেলায় আরও বেশি সতর্ক হতে হবেতাদের বেলায় ওষুধের মাত্রা, চোখের ড্রপ বা মলম এবং ইঞ্জেকশনের প্রয়োগবিধির (যেমন মাংসে বা শিরায়) ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবেএছাড়া চিকিৎসকেরও এ ব্যাপারে দায়িত্ব রয়েছে তাদের কর্তব্য_

১. রোগীকে রোগ এবং ওষুধ সম্পর্কে জানান২. ওষুধের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানান৩. নিজে থেকে বন্ধ করলে কি ক্ষতি হতে পারে জানানকোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে দ্রুত ডাক্তারকে জানানোর পরামর্শ দিন৪. কখন ও কিভাবে ওষুধ বন্ধ করা যাবে জানান৫. নিয়মিত ও নিয়ম মতো ওষুধ খেতে উৎসাহিত করুন৬. রোগীর খরচের দিকটা মাথায় রাখুন অযথা অতিরিক্ত দামী ওষুধ নেহায়েত প্রয়োজন না হলে বা জীবন রক্ষাকারী না হলে না লেখাই ভালো৭. প্রেসক্রিপশনে অসুখের পূর্ণ নাম, ওষুধের নাম, মাত্রা, খাবার নিয়ম, কতদিন খেতে হবে ইত্যাদি স্পষ্টাক্ষরে সুন্দরভাবে লেখা উচিত

এর সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ বিক্রেতার কর্তব্য প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ বিক্রি করা, শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থে যেনতেনভাবে যে কোনো ওষুধ বিক্রি না করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করা, দোকানে ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা ও সার্বিক তত্ত্বাবধান করা

ওষুধের অপব্যবহার, বিশেষ করে এন্টিবায়োটিকের রেজিস্ট্যান্স থেকে নিজেদের এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচাতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার

লেখক : ডিন, মেডিসিন অনুষদ, অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, বিএসএমএম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র:  ইন্টারনেট