বুধবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

যারা ইয়ে করে বিয়ে করতে যাচ্ছেন, পালিয়ে (আইনী পরামর্শমূলক)


যারা ইয়ে করে বিয়ে করতে যাচ্ছেন, পালিয়ে (আইনী পরামর্শমূলক)

আমাদের দেশের আইন আদালত সম্পর্কে যাদের ধারনা কম তাদের এই লেখা কাজে আসতে পারেআর এই লেখার উদ্দেশ্য পালিয়ে বিয়ে করতে উথসাহিত করা নয়, বরং পালিয়ে বিয়ে করার পর রিস্কগুলো সম্বন্ধে সাবধান করা

পালিয়ে বিয়ে করতে গেলে আপনাদের, মুসলিম ছেলে মেয়েদের, অনেকের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দেয় যেমন বিয়ের পরে কোনো সমস্যা হবেনাতো বা বিয়েটার বৈধতা কেমন হবেবিয়েটাই বা কোথায় করতে হবে? কোর্টে নাকি কাজি অফিসে? ছেলেরা ভাবে, মেয়ের বাবা যদি মামলা করে দেয় নারী নির্যাতনের? তাহলে কি জেল টেল খাটতে হবে? ইত্যাদি

অনেকে ভাবেন এসব ক্ষেত্রে হয়ত কোর্ট ম্যারেজ করতে হবেকোর্ট ম্যারেজ টার্মটা আমরা প্রায়ই শুনে থাকিকিন্তু এটা নিয়ে অনেকের এক্টু ভুল ধারনা আছেঅনেকে যারা অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বা পালিয়ে বিয়ে করতে চায় তারা কোর্ট মারেজ করতে যায় বা করতে চায়

অনেকে মনে করেন কোর্ট ম্যারেজ হয়তো কোর্টে গিয়ে বিয়ে করাঅথবা মাজিস্ট্রেট-এর সামনে বিয়ে করাআসলে তা নয়কোর্ট ম্যারেজ করতে হলে আপনাকে যেতে হবে কোন নোটারী পাবলিকের (সরকারী রেজিস্টার্ড উকিল) কাছেতিনি আপনাদেরকে (বর কনে) ১০০ বা ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি হলফনামায় সই করাবেন যাতে লিখা থাকবে আপ্নারা প্রাপ্তবয়স্ক এবং সজ্ঞ্যানে সেচ্ছায় বিয়ে করেছেন

তার মানে কি দাড়ালো? বিয়ে আপনাদেরকে আগেই করতে হবেকোথায়? যথারিতি কাজী অফিসেরেজিস্ট্রী কাবিনমুলেকাজী অফিসে কাবিননামায় সই করতে হবে কাজি সাহেবকে আপনাদের এস এস সি-এর সার্টিফিকেট বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখাতে হবে বয়স প্রমানের জন্যবয়স অবশ্যই আঠারো (মেয়ে) ও একুশ (ছেলে) হতে হবেআর লাগবে দুইজন সাক্ষীআর অই কাবিননামাই আপনাদের বিয়ের প্রধান আইনী দলিলআর নোটারী পাব্লিকের কাছে গিয়ে আপনি শুধু অই দলিলের আরও একটা সম্পূরক আইনী দলিল করে রাখলেন ভবিস্যতে মামলা টামলায় একটু সুবিধা পেতে

তবে জেনে রাখবেন, নোটারী পাবলিকের কাছে করা হলফনামার কোনো দাম নেই যদি আপনার কাবিননামা না থাকেকাবিননামা থাকলে আপনার বিয়ের পক্ষে আর কোনো ডকুমেন্টই লাগবেনাকাবিননামাই সব

এক পক্ষ হিন্দু বা মুসলিম বা অন্য ধ‌র্মের হলেও, ধর্ম পরিবর্তন না করেই বিয়ে করা সম্ভব। (আমি তান্ত্রিক-এর ২২ নং কমেন্ট দেখুন)

বিয়ে হয়ে গেলে অনেকসময় পরে দুই পক্ষের বাবা মা-রা মেনে নেয়, অনেক ময় মেনে নেয়নাঅনেকসময় মেয়ের বাবা ক্ষেপে গিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে বসে মামলাগুলো হয় সাধারনত অপহরনপূরবক ধর্ষনেরএই মামলাগুলোর জামিন বা রিমান্ড শুনানী এবং বিচার হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেমামলার ধারাগুলো জামিন-অযোগ্যএবং আমলযোগ্য, মানে পুলিশ এসব ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালতের পারমিশন ছাড়াই আসামিকে এরেস্ট করতে পারেতাই যখন শুনবেন মামলা হয়েসে তখন থেকে কিছুদিন পালিয়ে থাকুন কারন পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে কিন্তু প্রথমেই জামিন হবেনা

আর মানসিকভাবে শক্ত থাকুন, দুজনেইমামলা (উক্তরূপ) হবার পর তদন্ত শুরু হবেভিকটিম (মেয়ের বাবার চোখে মেয়েটি এখানে ভিকটিম)-এর জবানবন্দী দিতে হবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-এর সামনেএটি ২২ ধারার জবানবন্দি, ম্যাজিস্ট্রেট-এর চেম্বারে হয়কেউ কোন প্রভাব খাটাতে পারেনাএখানে মেয়েকে বলতে হবে, “আমি সেচ্ছায় বিয়ে করেছিআমাকে কেউ অপহরন করেনিব্যাসতাহলে মামলায় পুলিশ আর চার্জশীট দেবেনাআসামি (ছেলে) অব্যাহতি পাবে

তবে মেয়ের বাবা পুলিশকে ঘুষ দিয়ে ছেলেকে কোন ডাকাতি বা মার্ডার কেইসে গ্রেফতার দেখানোর (shown arrest) ব্যবস্থা করতে পারেআমাদের পুলিশ সব পারে ইনশাআল্লাহ
সূত্র: ইন্টরনেট ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন